প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ, ২০২২, ৮:৩৭ অপরাহ্ন
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তাঁর সরকারের শরিক মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান-এমকিউএম-পি। বুধবার সংবাদ সম্মেলনে সরাসরি এই ঘোষণা দেয় তারা। এই ঘোষণার পর বিরোধীদের পাল্লা ভারী হলো।
এই ঘোষণার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ইমরান সরকারের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী জানান, দেশটির সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সংগে একাধিক বৈঠক করেছেন ইমরান খান।
দেশটির জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে বিরোধীদের আনা অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সংকট কাটিয়ে উঠতে ইমরান খান ইতোমধ্যে একাধিক বৈঠক করেছেন দেশটির সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সংগে। এই খবর দিয়েছেন দেশটির তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী।
বুধবার ফাওয়াদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ক্ষমতাসীন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দেশটির সামরিক নেতৃত্বকে শ্রদ্ধা করে। দেশের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পাকিস্তান সেনাবাহিনীর। বিরোধী পাকিস্তান মুসলিম লিগ নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রধান নওয়াজ শরিফকে বিদ্রুপ করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর একটি সমস্যা ছিল। তিনি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান কবজায় নিতে চেয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে দুই দফা বৈঠক করেছেন উল্লেখ করে আশ্বস্ত করেন, কেউ ইমরান খানকে পদত্যাগ করতে বলেনি। আর প্রধানমন্ত্রীরও এমন কোনো পরিকল্পনা নেই।
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে মোট আসন ৩৪২টি। ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ১৭২টি ভোটের প্রয়োজন হবে। জিও টিভির সবশেষ তথ্যমতে, বিরোধীদের হাতে রয়েছে ১৯৯টি ভোট আর ইমরানের পক্ষে রয়েছে ১৪২ ভোট।
অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগ তুলে জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করে বিরোধী দলগুলো। পরে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পরিষদের অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করা হয়। প্রস্তাবের ওপর আগামী ৩ এপ্রিল ভোটাভুটি হতে পারে।
ইমরান ২০১৮ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন। ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত তাঁর সরকারের মেয়াদ রয়েছে। তবে অনাস্থা ভোটে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই তাঁর সরকারের পতন হতে পারে। পাকিস্তানে স্বাধীনতার পর দেশটির কোনো সরকার তার পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইমরানের ভাগ্যেও তেমনটা ঘটতে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।