প্রকাশ: সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৬:৪০ অপরাহ্ন
টাঙ্গাইল মির্জাপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রসহ লাইসেন্সবিহীন ইটভাটার ছড়াছড়ি। জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মির্জাপুরে জুড়ে বছরের পর বছর চলছে অবৈধ ইটভাটা। সরকারী নীতিমালা ও উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে কৃষিজমিতে গড়ে ওঠা ঐ ইটভাটাগুলোতে অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাচা কাঠ।
এতে বনজ সম্পদ উজাড়ের পাশাপাশি কৃষিজমি নষ্ট, ফসলহানি ও পরিবেশগত বিপর্যয় ঘটছে মারাত্মক। মির্জাপুরে ১০৭টি ইটভাটার মধ্যে অনুমোদিত মাত্র ৪৫টি। অন্য ৬৯টি চলছে পরিবেশের ছাড়পত্র ও লাইসেন্সবিহীন। তার মধ্যে আবার নতুন করে ৭টি নতুন অনুমোদনহীন ইট ভাটা চালু করা হয়েছে। সর্বমোট মির্জাপুর উপজেলায় ১১৪টি ইটভাটা রয়েছে।
নতুন স্থাপিত ভাটাগুলো হচ্ছে বহুরিয়া গ্রামের আরবিসি ব্রিকস, এমএসবি ও বাটা ব্রিকস, চান্দুলিয়া গ্রামের এইচইউবি ব্রিকস,দেওহাটা গ্রামের মল্লিকপাড়ার সনি ব্রিকস ও রান ব্রিকস এবং পাথালিয়াপাড়ার বিঅ্যান্ডবি ব্রিকস। এর মধ্যে রান ব্রিকসটির কিছু অংশ মির্জাপুর পৌরসভার বাইমহাটী এলাকায় পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মির্জাপুর উপজেলার কৃষিজমিতে গড়ে উঠেছে ১১৪টি ইটভাটা। সরকারি আইনে কৃষি জমি নষ্ট করে ইটভাটা স্থাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু তা সত্ত্বেও কমপক্ষে প্রতিটি ইটভাটার জন্য তিন-চার একর কৃষিজমি নষ্ট করে ইটভাটা স্থাপন করেছে প্রভাবশালীরা। আইনের ফাঁক-ফোকর ডিঙিয়ে উপজেলায় গড়ে উঠেছে এসব অবৈধ ইটভাটা। প্রতি বছরের মতো এবারও চলতি মৌসুমের শুরুতেই কৃষিজমি ও নদীর পলি মাটি কেটে ইটভাটাগুলোতে প্রস্তুত করা হচ্ছে নতুন ইট। এতে উপজেলায় কৃষিজমি হ্রাস ও উদ্বেগজনকভাবে কমছে খাদ্যশস্য উৎপাদন।
ইটভাটা মালিক সমিতির শক্তিশালী সিন্ডিকেটের প্রভাব, অর্থবিত্ত ও তদবিরে পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা অবৈধ ভাটা সম্পূর্ণরূপে উচ্ছেদে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না বলে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। এছাড়া কতিপয় ভাটা মালিক উচ্চ আদালতের দারস্থ হয়ে সৃষ্টি করেছে আইনি প্রতিবন্ধকতা। ফলে আইনি জটিলতার পাশাপাশি প্রশাসনিক নির্লিপ্ততায় অবৈধ ইটভাটা বন্ধসহ থামছে না গাছপালা নিধন তৎপরতা। পরিবেশ-প্রতিবেশের ক্ষতি ও কৃষিজমি বিনষ্ট করে ইটভাটা স্থাপনের পরিবর্তে কংক্রিট ঢালাইয়ের আদর্শ মানসম্পন্ন ব্লক ইট ব্যাপকভিত্তিক উৎপাদন ও সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ইমারত নির্মাণে তা ব্যবহারে জোর তাগিদ দেন স্থানীয় সচেতন মহল।
টাঙ্গাইল পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক জানান, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান শিগগিরই আরো জোরদার করা হবে।
টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক শরীফা হক জানান, পরিবেশের ছাড়পত্র ও লাইসেন্সবিহীন কোনো ইটভাটা চলতে দেওয়া হবে না। বেআইনি ইটভাটার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অভিযান শুরু করা হয়েছে। এছাড়া ভাটায় কাঠ পোড়ানো বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।