শীতের সময় বিভিন্ন সবজি পাওয়া যায়, যার মধ্যে ফুলকপি অন্যতম। বাজারে এখন অহরহ ফুলকপি পাওয়া যাচ্ছে। এই সবজি দিয়ে নানা পদ রান্না করে খেতে ভালোবাসেন অনেকেই। কেউবা এটা এড়িয়ে যান কোনো কারণ ছাড়াই। শীতের সময়ে ফুলকপি খাবেন নাকি এড়িয়ে যাবেন এই বিষয়টি নিয়ে পুষ্টিবিদের মতামত উঠে এসেছে এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে।
ফুলকপি একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর সবজি, যা স্বাস্থ্যের জন্য দারুণ উপকারী। এতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা ক্যানসার এবং হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। ফুলকপি খাওয়া সহজ এবং এটি ওজন কমানোর জন্যও বেশ কার্যকর। যদিও এটি ভিটামিনে পরিপূর্ণ, তবুও এর ক্যালোরি খুব কম। প্রকৃতপক্ষে, ফুলকপিতে প্রায় সব প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থের কিছু অংশ থাকে। পুষ্টিবিদ লভনীত বাত্রা ফুলকপির ৫টি উপকারিতা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি বলেন, ফুলকপি শীতকালের অন্যতম প্রচলিত সবজি, যা ব্রাসিকাসি পরিবারভুক্ত। এই পরিবারে ব্রোকলি, কালে এবং বাঁধাকপিও অন্তর্ভুক্ত। ফুলকপির উপকারিতা বলতে গিয়ে পুষ্টিবিদ কয়েকটি দিক নিয়ে আলোচনা করেন। যেগুলো হলো:-
কোলিনের অন্যতম উৎসব: ফুলকপিতে প্রচুর পরিমাণে কোলিন থাকে, যা মস্তিষ্কের শক্তি, স্মৃতি এবং মেজাজ উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কোলিন অ্যাসিটাইলকোলিন নামক একটি রাসায়নিক বার্তাবাহকের মূল উপাদান, যা সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমের সংকেত প্রদান এবং মস্তিষ্ক কোষের স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে।
ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়: ফুলকপি একটি ক্রুসিফেরাস সবজি, যা ব্রোকলি, কালে, ব্রাসেল স্প্রাউটস, বাঁধাকপি, শালগম ইত্যাদির সঙ্গে সম্পর্কিত। এই সবজিগুলিতে গ্লুকোসিনোলেটস নামে সালফারযুক্ত যৌগ থাকে, যা দেহে ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
হরমোন ভারসাম্য বজায় রাখে: এই অসাধারণ সবজিতে ইন্ডল-৩-কারবিনল নামক একটি উদ্ভিদ যৌগ রয়েছে, যা একটি উদ্ভিদ এস্ট্রোজেন হিসেবে কাজ করে। এটি শরীরের হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়তা করে।
প্রদাহ প্রতিরোধে সাহায্য করে: ফুলকপিতে বেটা-ক্যারোটিন, কোয়ার্সেটিন, সাইনামিক অ্যাসিড এবং বেটা-ক্রিপ্টোজ্যান্থিনের মতো শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এগুলি শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে এবং প্রদাহ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
হৃদযন্ত্রের যত্ন নেয়: ফুলকপি একটি হৃদযন্ত্রের জনু দারুণ উপকারী একটি সবজি। কারণ এতে সালফোরাফেন নামক একটি উদ্ভিদ যৌগ থাকে। সালফোরাফেন একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের কারণে সৃষ্ট প্রদাহজনিত ক্ষতি কমায়, যা হৃদরোগের বিকাশে প্রধান ভূমিকা পালন করে।
ফুলকপি কেবলমাত্র শীতের সময় পাওয়া যায়। তাই এই মৌসুমে স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে খাদ্যতালিকায় ফুলকপি রাখা উচিত। অনেক সময় শিশুরা ফুলকপি খেতে চায় না তাদের ফুলকপি দিয়ে তৈরি মুখরোচক খাবার দেয়া যেতে পারে।